কোটি ডলারের মডেলকন্যা এখন রাস্তার ফকির

আজ যে রাজা কাল সে ফকিরও হযে যেতে পারেন। এক সময়ে কাড়ি কাড়ি অর্থ রোজগার করা বিশ্বখ্যাত ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদকন্যা নাস্তাসিয়া আরবানো (৫৭) তার জীবন্ত উদাহরণ।

তিনি ছিলেন নামিদামি মডেল। মাত্র ২০ দিনে উপার্জন করতেন ১০ লাখ ডলার। মডেলিং করেছেন সুপারমডেল লিন্ডা ইভানজেলিস্তার মতো মডেলদের সঙ্গে। কাঁধে কাঁধ রেখে চলতেন জ্যাক নিকলসন ও ম্যাডোনার মতো তারকাদের সঙ্গে। ছিল হাত ভরা ডলার।

স্পেনের এল পেরিডিকোকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মডেলকন্যা বলেছেন, ‘আমি যে সব ম্যাগাজিনে কাজ করেছি, সেখানে সবাই আমাকে ভালোবাসতেন। বছরে মাত্র ২০ দিন কাজের জন্য আমাকে দেয়া হয়েছিল ১০ লাখ ডলার। এভাবে উপার্জন করেছি তিন থেকে চার বছর। এক রাতে আমি জ্যাক নিকলসনের সঙ্গে নৈশভোজ করেছি তো পরের রাতে অ্যান্ডি ওয়ারহোল অথবা রোমান পোলানস্কির সঙ্গে। পার্টি করেছি মেলানি গ্রিফিথ, ডন জনসন, সিমন ও গার ফানকেলের সঙ্গে।’

নাস্তাসিয়া আরও বলেন, ‘সিন পেনের সঙ্গে ম্যাটেরিয়াল গার্লখ্যাত ম্যাডোনার বিয়ে ঠিক হলো। বিয়েতে ডেভিড কিথকে আমন্ত্রণ করা হলো। ওই বিয়েতে আমি তো প্রায় চলেই গিয়েছিলাম। কারণ সে সময় আমি ডেভিড কিথের সঙ্গে ডেটিং মারছিলাম। কিন্তু ম্যাডোনার বিয়েতে যেতে পারিনি আমাদের কিছুটা সমস্যার জন্য। ওই সময় আমার সবই ছিল। আমি যেন একজন রানী ছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘হঠাৎ আমার জীবনের ছন্দপতন ঘটে। আমার সাবেক স্বামী ও আমার সন্তানদের বাবা আমার শুধু কাপড় চোপড় ছাড়া সব কিছু নিয়ে যায়। তার সঙ্গে সম্পর্কের সবচেয়ে ভালো যে জিনিসটি পেয়েছি তা হলো সন্তান। বাকি সব হরিবল বা ভয়াবহতা। আমার অর্থ দিয়েই তিনি সব কিছুর বিল দিতেন। তার সঙ্গে পরিচয় হওয়ার মাত্র দু’দিন পরই তিনি আবদার করলেন তাকে একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি কিনে দিতে। আমিও বোকা ছিলাম। একটি চেক সই করে দিলাম। কারণ, তাকে যে আমি ভালোবাসতাম।’

এখন চরম হতাশাগ্রস্ত নাস্তাসিয়া আরবানো। সেই হতাশায় দীর্ঘ নিঃশ্বাস টেনে তিনি বলেন, ‘ভাড়া দিতে না পারায় তাকে বেশ কয়েকটি বাসা থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। এখন রাত কাটান কোনো বন্ধুর বাসার সোফায় না হয় নদীর তীরে; অথবা রাস্তায়।’

নাস্তাসিয়া বলেন, ‘আমি শুধু বেঁচে থাকতে চাই না। সম্মানের সঙ্গে জীবন চালাতে চাই। বেঁচে থাকার লড়াইয়ে আমি বড় ক্লান্ত। এর ওর কাছে অর্থ চেয়ে আমি লজ্জিত। আমার চারপাশে যারা ছিলেন তারা সরে গেছেন। সবাই সরে যায়। আমি চাই অন্তত আমার সন্তানরা আমাকে একটু দেখাশোনা করুক। আমি আমার সম্মান ফিরে পেতে চাই।’

তখন হাওয়ায় উড়তেন। কখনো ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তাও করেননি। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাসে; সেই বিখ্যাত মডেলকন্যা এখন গৃহহীন। রাত কাটে বারসেলোর রাস্তায়। স্পেনের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ান। যেখানে রাত হয় সেখানেই ঘুমান। তবে কেন? তার উপার্জনের এত টাকা গেল কোথায়? এমন প্রশ্ন সবার। নাস্তাসিয়া জানালেন, সাবেক স্বামীর জন্য তার এ পরিণতি। তিনিই তার সব অর্থ নিয়ে চলে গেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *