ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, টুপি, কাঁকড়া রফতানিতে ভর্তুকি

রফতানি আয় বাড়ানো ও বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এতদিন ২৬ শ্রেণীর পণ্যে নগদ সহায়তা বা ভর্তুকি দিয়ে আসছিল সরকার। তালিকাভুক্ত এসব পণ্য রফতানিতে ২ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা পেয়ে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা। এখন থেকে ফার্মাসিউটিক্যালস, টুপি, কাঁকড়া, কুঁচে, মোটরসাইকেলসহ আরো নয় শ্রেণীর পণ্য রফতানিতে এ নগদ সহায়তা দেবে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ থেকে এ নিয়ে গতকাল এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। গতকাল থেকেই এ সহায়তার নিয়ম কার্যকর হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনের ভাষ্য অনুযায়ী বলা হয়, দেশের রফতানি বাণিজ্যকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে সরকার চলতি অর্থবছর কিছু পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে নগদ সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ভিত্তিতে চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এসব পণ্য জাহাজীকরণের ক্ষেত্রে নির্ধারিত হারে নগদ সহায়তা পাওয়া যাবে। তবে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত নয়, এ ধরনের পণ্যে নগদ সহায়তা প্রাপ্তির বিষয়টি কার্যকর হবে ১০ সেপ্টেম্বর (গতকাল) থেকে। সরকারি ভর্তুকির তালিকায় যুক্ত হওয়া পণ্যগুলো হলো— ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, ফটোভোলটাইক মডিউল, মোটরসাইকেল, কেমিক্যাল পণ্য (ক্লোরিন, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, কস্টিক সোডা ও হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড), রেজর ও রেজর ব্লেড, সিরামিক দ্রব্য, টুপি, কাঁকড়া ও কুঁচে (হিমায়িত ও সফটসেল, তবে পরিবেশ ও বন বিভাগের ছাড়পত্র গ্রহণসাপেক্ষে) এবং গলিত শিট। এসব পণ্যে ১০ শতাংশ হারে নগদ ভর্তুকি পাওয়া যাবে।

গত অর্থবছর মোট ২৬ ধরনের পণ্য রফতানির বিপরীতে নগদ সহায়তা পেয়েছেন রফতানিকারকরা।

চলতি অর্থবছরও এসব পণ্য রফতানির বিপরীতে সর্বনিম্ন ২ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে সিনথেটিক ও ফেব্রিকসের মিশ্রণে তৈরি পাদুকা, তথ্যপ্রযুক্তি, সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার, অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যালসে ইনগ্রেডিয়ন্টস (এপিআই), অ্যাকুমুলেটের ব্যাটারি ও নারকেল ছোবড়ার আঁশ দ্বারা উৎপাদিত পণ্য।

এছাড়া দেশী বস্ত্র খাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্রব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা ৪ শতাংশ, বস্ত্র খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অতিরিক্ত সুবিধা ৪ শতাংশ, নতুন পণ্য বা বাজার সম্প্রসারণ সহায়তা (আমেরিকা, কানাডা ও ইইউ ছাড়া) ৪ শতাংশ, ইউরো অঞ্চলে বস্ত্র খাতে রফতানিকারকদের জন্য বিদ্যমান ৪ শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তা ২ শতাংশ, হোগলা, খড়, আখের ছোবড়া ইত্যাদি দিয়ে উৎপাদিত হস্তশিল্প রফতানিতে নগদ সহায়তা ২০ শতাংশ, কৃষিপণ্য ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যে ২০ শতাংশ, গরু-মহিষের নাড়ি, ভুঁড়ি, শিং ও রগ (হাড় ছাড়া) রফতানিতে ১০ শতাংশ, হালকা প্রকৌশল পণ্য রফতানিতে ১৫ শতাংশ, শতভাগ হালাল মাংস রফতানিতে ২০ শতাংশ, বরফ আচ্ছাদনের হারভেদে হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রফতানিতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেয়া হবে।

চামড়াজাত পণ্য ও আসবাব রফতানিতে ১৫ শতাংশ, জাহাজ, প্লাস্টিক পণ্য ও পেট বোতল-ফ্লেক্স রফতানিতে ১০, শস্য ও শাকসবজির বীজ এবং পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন রফতানিতে ২০ শতাংশ ও পাটজাত দ্রব্য রফতানিতে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা পাওয়া যাবে। এছাড়া আলু রফতানিতে ২০ শতাংশ, সাভারে চামড়া শিল্পনগরীতে স্থানান্তরিত শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে ক্রাস্ট ও ফিনিশড লেদার রফতানিতে ১০ শতাংশ এবং পাটজাত চূড়ান্ত দ্রব্য রফতানিতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেয়া হবে। একই সঙ্গে দেশে উৎপাদিত কাগজ ও কাগজ-জাতীয় দ্রব্য রফতানিতে ১০ শতাংশ এবং আগরবাতি ও আতর রফতানিতে ২০ শতাংশ ভর্তুকির বিষয়টি অপরিবর্তিত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *