ধরাছোঁয়ার বাইরে লাউ

স্টাফ রিপোর্টার

কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেই, নেই পরিবহন সমস্যা। সরবারাহের অপ্রতুলতাও নেই। তবুও খুলনার বাজারে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে সবজির মূল্য। ভরা মৌসুমে হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। প্রায় দুই গুণ বেশি দামে কিনতে হচ্ছে সব ধরনের সবজি। সেইসঙ্গে বেড়েছে প্রায় সবধরনের চালের দাম। যা মরার ওপর খাড়ার ঘাঁয়ের মতোই হয়ে উঠেছে।

সবজি আর চালের বাজারে যখন চড়া দামের হাঁকডাক, তখন একটু হলেও স্বস্তির বাতাস বইছে ভোজ্য তেলের বাজারে। সরবরাহ ঠিক থাকায় মাছের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।

শীতের শুরু থেকেই খুলনার সবজি বাজারে একটু একটু করেই দাম কমে আসছিলো সব ধরনের সবজির। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে থমকে যায় দাম কমার গতি। প্রায় দুই সপ্তাহ একই দাম স্থির থাকে বাজারে। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই গত ৪-৫ দিনে সব সবজির দাম কেজি প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে গেছে। সবচেয়ে দাম বেড়েছে লাউয়ের। ৩০ টাকার একটি লাউ এখন কিনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।

খুলনার টুটপাড়া জোড়াকল বাজার, রূপসা সন্ধ্যা বাজার, ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজার, মিস্ত্রিপাড়া বাজার, করপাড়া বাজার, রিয়া বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে এক কেজি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, বিটকপি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, মূলা ২০ টাকা, সীম ৪০ টাকা, টমেটো ৫০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁয়াজের কোলি ২০ টাকা, লালশাক ৩০ টাকা ও লাউশাক ৫০ টাকা। এসব সবজি গত দুই সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি ১৫ থেকে ২০ টাকা কমে পাওয়া গেছে।

এদিকে নগরীর কয়েকটি চালের পাইকারি বাজার ঘুরে জানা গেছে, মিনিকেট সরু ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে মাঝারি মিনিকেট চাল ৫৫ টাকা, লোকাল ২৮ ইরি সেদ্ধ ৪৭ টাকা, বাঁশমতি ৬০ টাকা ও নাজিরশাল ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত এক সপ্তাহ আগে ২-৩ টাকা কম ছিল।

নগরীর রূপসা কাঁচাবাজারের চাল ব্যবসায়ী এস কে জাকারিয়া জানান, গত দেড় মাস ধরে ভারতীয় চালের আমদানি বন্ধ রয়েছে। বাজারে যা আছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। গত এক সপ্তাহ ধরে চালের বাজার গরম। চালের বাজার দর কমার কোনো লক্ষণ নেই।

দোলখোলা বাজারের ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম জানান, হঠাৎ করে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। চিকন চালের মৌসুম শেষ। বাজারে চালের ঘাটতি রয়েছে। ভারতীয় চালের আমদানি হলে বাজারে দর পড়তে পারে। তাছাড়া আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই নতুন ধানের আগমন ঘটলে বাজার একটু নরম হতে পারে।

বড় বাজারের চাল ব্যবসায়ী মেসার্স শংকর কুন্ড এন্টারপ্রাইজের মালিক শংকর কুন্ডু জানান, কিছু কিছু চালের দর বেড়েছে। মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়েছে। অনেক কৃষক এখনও ধান কাটতে পারেনি। কয়েকদিন আগের বৃষ্টির কারণে ক্ষেতে পানি জমে রয়েছে। মিল মালিকরা এখনও চাল তেমন উৎপাদনে যেতে পারেনি। দর আরও বাড়তে পারে। দাম কমাতে ভারতীয় চাল আমদানির ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

মেসার্স কুন্ডু ট্রেডার্সের মালিক কুন্ডু জানান, গেল দু’বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম বেশি। ব্যাপারি থেকে মিলের সংখ্যাও বেশি। যা পাওয়া যায় মিলাররা অধিক দরে ক্রয় করছেন। পরবর্তীতে গোডাউনে মজুদ করে রাখছেন তারা। দাম আরও বাড়লে সেগুলো তারা বাজারজাত করবেন। চালের দাম বৃদ্ধির জন্য তিনি মিল মালিকদের দায়ী করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *