তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে বৈশ্বিক ইভির বাজার

স্টাফ রিপোর্টার

তীব্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি (ইভি) খাতে। চীন, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার মতো অঞ্চলে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও ক্রেতাদের কাছে গ্রহণযোগ্যতার ফলে খাতটিতে প্রায় অর্ধট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের বাজার সৃষ্টি হয়েছে। লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে নির্মাতাদের আরো বেশি বিনিয়োগ করতে হবে শিল্পটিতে। সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ডেটা করপোরেশন (আইডিসি)। খবর দ্য ন্যাশনাল।

আইডিসি বলেছে, টেসলার মতো প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডগুলোর জনপ্রিয়তা বাড়াতে হলে গাড়ির মডেলগুলোয় বৈচিত্র্য আনতে হবে। পাশাপাশি বাজারের শেয়ার ধরে রাখতে হলে সাশ্রয়ী মূল্যে গাড়ি বিক্রি করতে হবে। আইডিসির পরামর্শক ও গবেষণা পরিচালক অ্যাডেলা গুও জানিয়েছেন, ‘‌এ বাজারে প্রতিযোগিতা আরো তীব্র হয়ে উঠবে এবং পণ্যগুলোয় বৈচিত্র্য আসবে। ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোয়ও শিল্পটি বিকাশের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, বাজারে সেসব নির্মাতারাই এগিয়ে থাকবে, যারা দ্রুত এ খাতে শক্তিশালী বিনিয়োগ করতে সক্ষম হবে। ইভি নির্মাতাদের চিন্তা করা উচিত কীভাবে প্রযুক্তি কৌশলকে আরো বাড়ানো যায়, যাতে সস্তায় ভালো মানের গাড়ি বাজারে আনা যায়। গাড়ি নির্মাতারা তাদের ভোক্তা ও বাণিজ্যিক বিভাগে প্রযুক্তির সম্ভাবনা বাড়ানোর পাশাপাশি জ্বালানি সংরক্ষণের দিকে জোর দিচ্ছে। ফলে ইভির বৈশ্বিক বাজার ধীরে বড় হচ্ছে।

অনেক দেশের সরকারই এ খাতে ভর্তুকি ও ট্যাক্স মওকুফসহ প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, যাতে জনগণ ইভি কিনতে আগ্রহী হয়। তবে সম্ভাব্য ক্রেতাদের সুবিধাগুলো পেতে হলে নির্দিষ্ট কিছু মানদণ্ড পূরণ করতে হয়। ফরচুন বিজনেস ইনসাইটসের সাম্প্রতিক ডেটা দেখায়, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী ইভির আনুমানিক বাজার রয়েছে ৫০ হাজার কোটি ডলারের মতো। ২০৩০ সালের মধ্যে এ বাজার তিন গুণ বেড়ে প্রায় ১ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলার হবে। এক দশকে ১৮ শতাংশ চক্রাকার হারে বাড়বে বাজার।

জার্মান বাজার বিশ্লেষক প্লাটফর্ম স্ট্যাটিস্টার তথ্য বলছে, ২০২৩ সাল পর্যন্ত গাড়ি বিক্রির পরিমাণ আনুমানিক ১ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার। ২০২৮ সাল নাগাদ গাড়ি বিক্রির সংখ্যা ৬০ শতাংশ বেড়ে ১ কোটি ৭০ লাখে দাঁড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ১ কোটি ৭০ লাখ গাড়ির মধ্যে তিন-চতুর্থাংশের বেশি হবে ব্যাটারি চালিত ইভ ও বাকিগুলো হবে হাইব্রিড মডেলের। হাইব্রিড হচ্ছে এমন গাড়ি, যাতে একই সঙ্গে ব্যাটারি ও জীবাশ্ম জ্বালানি উভয় সিস্টেম সক্রিয় থাকে।

আইডিসি আরো আশাবাদ জানিয়ে ২০২৩ সালে ১ কোটি ৪০ লাখ গাড়ি বিক্রির পূর্বাভাস দিয়েছে, যা সামগ্রিক অটোমোবাইল বাজারের ১৮ শতাংশ। এর তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালে ইভি শিল্পের বিশ্বব্যাপী শীর্ষ তিন নির্মাতা ছিল বিওয়াইডি, টেসলা ও সাইক-জিএম-উয়িলিং (এসজিএমডব্লিউ)। চীনের বিওয়াইডিকে পেছনে ফেলে গত বছর বিশ্বের বৃহত্তম ইভি প্রস্তুতকারকের স্থান দখল করেছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন মার্কিন কোম্পানি টেসলা।

আইডিসি বলছে, গত বছর ইভি খাতে আরো অনেক কোম্পানির উত্থান ঘটেছে। তবে টেক্সাসভিত্তিক টেসলার বাজার ২০১৯ সালে ১৭ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ১৩ শতাংশে নেমে এলেও আগামীতে ১০ শতাংশে স্থিতিশীল থাকার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *