মধ্যপ্রাচ্যের ডিজিটাল অর্থনীতি ৭৮ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছবে
মধ্যপ্রাচ্যের ডিজিটাল অর্থনীতির আকার ২০৩০ সালের মধ্যে ৭৮ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছবে। অনুকূল পরিবেশ, সরকারি সহযোগিতা ও পর্যাপ্ত তহবিলের সাহায্যে ডিজিটাল অর্থনীতির আকার হবে বর্তমানের তুলনায় চার গুণ। এ দশকজুড়ে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার থাকবে ২০ শতাংশের ওপর। বৈশ্বিক ডিজিটাল অর্থনীতির তুলনায় মধ্যপ্রাচ্যের সম্প্রসারণ হবে দ্রুত। এমনটাই উঠে এসেছে সুইস ব্যাংক ইউবিএসের সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে। খবর দ্য ন্যাশনাল।
প্রতিবেদন অনুসারে, ডিজিটাল অর্থনীতির খাতে মধ্যপ্রাচ্য বৈশ্বিক মাত্রাকে অতিক্রম করে যাবে। ডিজিটাল অর্থনীতির মাধ্যমে বৈশ্বিক আয় ২০২২ সালে ছিল ১০ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে ২০৩০ সালে সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়াবে ২৩ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার। বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার থাকবে ১০ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০৩০ সালের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের ডিজিটাল অর্থনীতির আকার বৈশ্বিক জিডিপির ১৩ দশমিক ৪ শতাংশের সমান হবে। ২০২২ সালে এ আকার ছিল বৈশ্বিক জিডিপির ৪ শতাংশের সমান। যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত অর্থনীতির জন্য খাতটি জিডিপির ১৫ শতাংশ।
ইউবিএস ডিজিটাল ইকোনমিককে দুটি প্রধান অংশে ভাগ করেছে। প্রথমটি সনাতন তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যয়। কোনো ভোক্তা ও প্রতিষ্ঠান হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও পরিষেবার পেছনে যা ব্যয় করে, তা এ ধারার অন্তর্ভুক্ত। দ্বিতীয়টি হলো ইন্টারনেট ব্যয়। এখানে রয়েছে ই-কমার্স, ডিজিটাল বিজ্ঞাপন, অনলাইন গেমিং, স্ট্রিমিং, ফিনটেক ও অন্যান্য। ইউবিএসের দাবি, অনুকূল জনমিতি, নীতিগত সহযোগিতা, পর্যাপ্ত তহবিল ও প্রযুক্তিগত উত্থান মধ্যপ্রাচ্যের ডিজিটাল অর্থনীতির সম্প্রসারণে ভূমিকা পালন করেছে। বাজার পরিস্থিতি এখনো সম্ভাবনাময়।
ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারগুলো ডিজিটাল অর্থনীতির দিকে ঝুঁকে পড়ার ক্ষেত্রে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছে। পৃথিবী যেহেতু প্রযুক্তিনির্ভর ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে, মধ্যপ্রাচ্য বিষয়টিকে অভিযোজিত করে নিয়েছে তাদের লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে। মধ্যপ্রাচ্য, তুরস্ক ও আফ্রিকা অঞ্চলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বার্ষিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের দাবি অনুসারে, ২০২৩ সালে ডিজিটাল অর্থনীতির আকার ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার অতিক্রম করতে পারে।
সৌদি আরব ও আরব আমিরাত আরব বিশ্বের দুটি বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। ডিজিটাল অর্থনীতি খাতে তাদের ব্যয় যথাক্রমে ৩ হাজার ৪৬০ কোটি ডলার ও ২ হাজার কোটি ডলার। তারা মধ্যপ্রাচ্যের ডিজিটাল অর্থনীতিকরণের বিবর্তনে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করছে। বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ বাড়বে চলতি দশকেই। বিশেষ করে সফটওয়্যার ও ইন্টারনেট ডাটার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ আরো বাড়বে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। ইউবিএস থেকে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিতে যুক্ত হওয়ার জন্য মাত্র দুটি রাস্তা রয়েছে। হয় কোনো শিল্প খাতে বিনিয়োগ করা, না হলে কোনো কোম্পানিতে। শিল্প খাতে বিনিয়োগের বেলায় আমরা দ্রুত বর্ধনশীল খাতগুলোর কথাই বিনিয়োগকারীদের অবহিত করি।
উদ্যোক্তা ও কোম্পানির জন্য ২০২২ সালে বিনিয়োগ ১ হাজার ৩৬০ কোটি ডলারে পৌঁছেছিল। ২০২১ সালের তুলনায় যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম।