ভারতের ফ্রি ট্রানজিট পাবে বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার

বাংলাদেশকে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির জন্য বিনামূল্যে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। এক্ষেত্রে ভারতের বন্দর অবকাঠামো ব্যবহারের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের।

বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ও ভারতের এক যৌথ বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।

এর আগে মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) নয়াদিল্লি সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বিপাক্ষিক ও একান্ত বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাতটি সমঝোতা স্মারকে সই করে দুই দেশ।

পরদিন বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এই যৌথ বিবৃতিতে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আলোচনা, প্রস্তাব এবং সিদ্ধান্ত তুলে ধরা হয়।

এতে বলা হয়, ভারত তার ভূখণ্ডের মাধ্যমে নির্দিষ্ট স্থল শুল্ক স্টেশন/বিমানবন্দর/সমুদ্রবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির জন্য বিনামূল্যে ট্রানজিট সুবিধার প্রস্তাব দিয়েছে। তৃতীয় দেশে ট্রান্সশিপমেন্টের জন্য ভারতের বন্দর অবকাঠামো ব্যবহার করার জন্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে আমন্ত্রণ জানিয়েছে নয়াদিল্লি।

নেপাল ও ভুটানে পণ্য রপ্তানির জন্য বাংলাদেশকে বিনামূল্যে ভারত ট্রানজিট দিচ্ছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সদ্য উদ্বোধন হওয়া চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রুটের মাধ্যমে ভুটানের সঙ্গে রেল যোগাযোগের অনুরোধ করেছে এবং ভারত তার অনুরোধের বিষয়টি কার্যকারিতা ও সম্ভাব্যতার ভিত্তিতে বিবেচনা করতে সম্মত হয়েছে। এই রুট এবং অন্যান্য আন্তঃসীমান্ত রেল সংযোগগুলো কার্যকর করার জন্য বাংলাদেশকে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি ক্রসিংয়ে বন্দর বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছে ভারত।

যৌথ বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, বৈঠকে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী বিবিআইএন মোটর ভেহিকেল চুক্তি দ্রুত কার্যকর করার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক ও উপ-আঞ্চলিক সংযোগ উন্নত করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করতে সম্মত হন।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ভারত পশ্চিমবঙ্গের হিলি থেকে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে মেঘালয়ের মহেন্দ্রগঞ্জ পর্যন্ত— একটি মহাসড়কসহ নতুন উপ-আঞ্চলিক সংযোগ প্রকল্প শুরু করতে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছে এবং এ বিষয়ে একটি বিশদ প্রকল্প প্রতিবেদন তৈরির প্রস্তাব করেছে। অন্যদিকে ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড ত্রিপক্ষীয় হাইওয়ে প্রকল্পের চলমান উদ্যোগে অংশীদার হওয়ার জন্য বাংলাদেশ তার আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।

এতে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে তাদের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তারা এই অঞ্চলে এবং এর বাইরে সন্ত্রাসবাদ, সহিংস চরমপন্থা এবং মৌলবাদের বিস্তার রোধে তাদের সহযোগিতা আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

যৌথ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সীমান্তে প্রাণহানির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে বলে সন্তোষ প্রকাশ করে উভয় পক্ষ এ সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। এছাড়া অস্ত্র, মাদকদ্রব্য ও জাল মুদ্রার চোরাচালানের বিরুদ্ধে এবং বিশেষ করে নারী ও শিশুদের পাচার রোধে দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টা প্রশংসার সঙ্গে উল্লেখ করেছে উভয় পক্ষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *