বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ কিনেছে ভারত
বিদায়ী অর্থবছর বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ আমদানি করেছে ভারত। অলংকার খাতে মূল্যবান ধাতুটির চাহিদা আমদানি বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা পালন করেছে। তবে ঊর্ধ্বমুখী আমদানি দেশটির বাণিজ্য ঘাটতিও বাড়িয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে ভারতের স্বর্ণ আমদানি ৩৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় ৪ হাজার ৬১৪ কোটি ডলারের স্বর্ণ কেনা হয়। এর আগের অর্থবছর আমদানি করা হয়েছিল ৩ হাজার ৪৬২ কোটি ডলারের স্বর্ণ।
বিদায়ী অর্থবছর ঊর্ধ্বমুখী স্বর্ণ আমদানিতে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়ায় ১৯ হাজার ২৪১ কোটি ডলারে, যা এর আগের অর্থবছর ছিল ১০ হাজার ২৬২ কোটি ডলার।
চীনের পর ভারত বিশ্বের শীর্ষ স্বর্ণ ব্যবহারকারী দেশ। মূলত দেশটির স্বর্ণালংকার খাত আমদানি বৃদ্ধির চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে। স্বর্ণ আমদানির মাধ্যমে অলংকার তৈরি করে তা বিভিন্ন দেশে রফতানি করে ভারত। বিদায়ী অর্থবছর দেশটির স্বর্ণালংকার রফতানি ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের অলংকার রফতানি করা হয়।
ভারতে বর্তমানে চলছে উৎসবের মৌসুম। উৎসবের আমেজকে ঘিরে দেশটির ব্যবসায়ীরা স্বর্ণের ওপর আকর্ষণীয় মূল্যছাড় দিচ্ছেন। এতে বেড়ে গিয়েছে মূল্যবান ধাতুটির চাহিদা। গত সপ্তাহের শুরুর দিকে স্থানীয় বাজারে স্বর্ণের দাম এক মাসের সর্বনিম্নে নেমে যায়।
তবে ভারতে বাড়লেও বিশ্বের শীর্ষ স্বর্ণ ব্যবহারকারী দেশ চীনে সীমিত মূল্যবান ধাতুটির কেনাবেচা। কারণ কভিড-১৯ ভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ঠেকাতে দেশটি কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের ভারতীয় আঞ্চলিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামসুন্দরাম পিআর বলেন, চলতি উৎসব মৌসুমে খুচরা বাজারে ঊর্ধ্বমুখী থাকবে স্বর্ণের চাহিদা। যদিও ভূরাজনৈতিক অস্থিরতায় বাজার পরিস্থিতি অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। রিদ্দিসিদ্ধি বুলিয়নসের পরিচালক মুকেশ কোঠারি বলেন, বর্তমানে স্বর্ণালংকারের চাহিদায় কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা দিয়েছে। তবে ভালো পরিমাণ মূল্যছাড়ে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে। ডিলাররা প্রতি আউন্সে ৩৫ ডলার করে মূল্যছাড় দিচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে স্বর্ণ আমদানিতে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে ভারত। এ সময় দেশটি ২০২০ সালের তুলনায় দ্বিগুণ বেশি স্বর্ণ কিনেছে। বাজার বিশ্লেষকরা বলেন, বিশ্বজুড়ে প্রথম যখন নভেল করোনাভাইরাস মহামারী আঘাত হানে, তখন ভারতে বিয়ে ও উৎসবের আয়োজন কমে যায়। কিন্তু ২০২১ সালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে ওঠায় আবারো উদযাপনের আমেজ ফিরে আসে। বাড়ে স্বর্ণের চাহিদা।