ঋণখেলাপির তথ্য সরাসরি যাচাইয়ের সুযোগ পেল ডিএসই
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী কোনো কোম্পানি, উদ্যোক্তা এবং পরিচালকের ঋণখেলাপির তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি) থেকে সরাসরি যাচাই করতে পারবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বরাবর এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসইকে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এতদিন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মাধ্যমে ঋণখেলাপির তথ্য যাচাই করত ডিএসই।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির আবেদন করার পর আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কোম্পানি, উদ্যোক্তা ও পরিচালক কোনো ব্যাংকের ঋণখেলাপি নয় বলে স্টক এক্সচেঞ্জে অঙ্গীকার দিয়ে থাকে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি কি না, তা যাচাই করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ডিএসই। এতদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ঋণখেলাপির তথ্য পেতে বিএসইসি’র মাধ্যমে যোগাযোগ করতে হতো। এখন থেকে কোনো মাধ্যম নয়, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করা কোনো কোম্পানি, উদ্যোক্তা বা পরিচালকের তথ্য সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি ডাটা থেকে যাচাই করতে পারবে ডিএসই। তাতে ঋণখেলাপি হয়েও কোনো কোম্পানি মিথ্যা তথ্য দিলে দ্রুত সময়ে তা যাচাই করা যাবে। কোম্পানির দেওয়া তথ্য যাচাইয়ে সঠিক বলে প্রমাণিত হলে দ্রুত সময়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারবে সেই প্রতিষ্ঠান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ঋণখেলাপি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তথ্য সহজে পেতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর গত নভেম্বরে একটি চিঠি দেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। চিঠিতে ডিএসই জানায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড) রেগুলেশনস, ২০২২ অনুযায়ী অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডের (এটিবি) অধীনে আগ্রহী ডেবট সিকিউরিটিজ তালিকাভুক্তির অনুমোদন করে। তালিকাভুক্তির অনুমোদন দেওয়ার আগে আইনের বিধান অনুযায়ী আগ্রহী কোম্পানি, উদ্যোক্তা বা পরিচালকরা কোনো ব্যাংকের ঋণখেলাপি নয়, তা নিশ্চিত করার প্রয়োজন আছে। এছাড়াও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড) রেগুলেশনস, ২০২২ এর ৭ (২) (বি)(ix) ধারা অনুযায়ী, কোম্পানির তালিকাভুক্তির আবেদনের সময়, কোম্পানি বা উদ্যোক্তা বা পরিচালকরা ঋণখেলাপি নয় মর্মে একটি অঙ্গীকার দিতে হয়। পরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ তা যাচাই করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের শরণাপন্ন হয়। তাই, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনলাইনভিত্তিক সিআইবি পরিষেবা পেতে গভর্নরের অনুমোদনের জন্য আবেদন করে ডিএসই। একই সঙ্গে ডিএসই নিশ্চিত করে যে, তথ্যগুলো শুধু জাতীয় উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে এবং এর গোপনীয়তা কঠোরভাবে বজায় রাখা হবে। এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসইকে সরাসরি সিআইবি থেকে ঋণখেলাপির তথ্য পেতে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এম সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরাসরি ঋণখেলাপির তথ্য যাচাইয়ের সুবিধা পেয়েছে ডিএসই। এতে ঋণখেলাপির তথ্য যাচাইয়ে সময় কম লাগবে। কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্ত হওয়ার অনুমোদন দ্রুত সময়ে হবে। বিশেষ করে অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডের অধীনে ডেবট সিকিউরিটিজগুলো কম সময়ে বাজারে আসতে পারবে।
উল্লেখ্য, দেশের আর্থিক বাজারের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক বাংলাদেশ ব্যাংক অনলাইনভিত্তিক সিআইবি পরিষেবাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে, যা ক্রমাগত বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের বহুমুখী সুবিধা দিচ্ছে। এবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জও এই সুবিধার অন্তর্ভুক্ত হলো।